কঠিন ঝাড়া
কঠিন ঝাড়া
মোঃ মেহেদী হাসান
আমাদের বাড়ীর সামনে মসজিদ। মসজিদের ইমাম মক্তব পড়াতেন। আমি ছিলাম সেখানকার ছাএ। হুজুর মাদ্রাসার শিক্ষক।অনেক বড় আলেম। রাতে মসজিদে থাকতেন।সকালবেলা ছাএদের মক্তবে
পড়াতেন। প্রতিদিন সকালে যখন সালাতুল ইসরাক পড়তেন ছেলেরা তখন এসে হুজুরের গায়ে কিল ঘুসি মারতো।হুজুর সালাতে এতোটাই মগ্ন থাকতো যে,নামাযের পর কে কে কিল মেরেছে তা মনে থাকতোনা। এজন্য ছাএরাও একে একে এসে মনের ঝাল মেটাতো । আমর এত সাহস নাই। হুজুর আবার পেটনোর সময় কাউকে মানতোনা।একদিন হুজুর নিজের ভাগনেকে এমন মাইর দিসে যে আমি তা কখনোই ভুলবোনা।পিটতে পিটতে হুজুরে টুপি কাত হয়ে গেল। কিছুক্ষন পর পড়েও গেল। আমি উঠিয়ে দিলাম।
এমন মাইরের কারনে সবাই তাকে জম হুজুর বলে ডাকতো।আবার ভালো ছাএদের ভালোবাসতেন আমি আবার বেশি ভালো ছাএ না হলেও যেদিন দেখতাম হুজুর পড়া ধরবেন সেদিন হুজুর কে তাল মেরে বেঁচে যেতাম বা পড়া পারার ভান করে হুজুরের সাহায্যার্থে অন্যপাশের ছোটদের পড়া ধরতাম।এতে হুজুর আমার উপর খুশি ছিলেন।
একদিন তো প্রায় ধরা খেয়েই যাচ্ছিলাম। আমার আগেরজনকে পড়া জিগ্যেস করতেই সেকি কান্না। হুজুর বলল,"তোর বাবার নামকি?" সে উওরে বলে"আমার মা জানে,আমি জানিনা যাই জিগ্যেস করে আসি?"হুজুর বলেন, "বাপের নামই জানস না, পড়া পারবি কি করে।নাকি পড়ার ভয়ে সব ভুলে গেলি। বস বেটা আমি আবার পড়া ধরতে আসবো"। এবারতো আমার পালা, ওর থেকে বাহিরে বের হওয়ার কথা মাথায় এল, পালাবার পথও পাচ্ছি না,এ হুজুর যে কিভাবে আরবি বানান পড়ায়,এত জগন্য বাক্য যে পড়তে গেলে এমনিতেই জিহ্বায় প্যাঁচ লেগে যায়।মুখস্ত করতে গেলে মস্তিষ্কের নিউরনও প্যাচিয়ে যাবে,যেমন:ডান চোখ যবরের উপর থাকিবে বাম চোখ যের এ থাকিবে এর পর কান, নাখ, হাত, মন সবই লাগাতে হয়,আমি পারি না তাই পালিয়ে বাঁচতে চাই,হুজুর এবার আমাকে ধরল,আজ আর বাঁচায় কে, এমন সময় কোন পূর্বাভাস ছাড়াই সশব্দে অজুটা পানচার হলো।হুজুর বলল,"ভাগ বেটা,অজু করে আয়"। আমি বাহিরে অনেক্ষন কাটিয়ে দিলাম যখন সময় প্রায় শেষ তখন ফিরে আসলাম।এখনতো পড়া ধরার সময় শেষ আমাকে আর পায় কে।শাহরুখ খানের সেই ডায়ালগ সত্যি হল।যখন কেউ কিছু করতে চায়,পুরো পৃথিবী তার সাহায্যে লেগে যায়।
কোনোদিন কোনোদিন পড়ায় না গেলে বাসা ফোন করে।একদিন আমি সকালে যাচ্ছিনা দেখে হুজুর ফোন করল,আম্মা অনেক ডাকল শুনতে না পেয়ে উঠলাম না,তাই আবার ফোন করায় আম্মা মোবাইল আমার কানে ধরে বলে কথা বল,আমি ঘুমাতে ঘুমাতে বললাম, "কে? "ও পাশ থেকে ভেসে এলো বিশাল এক জ্বালাময়ী ধমক।ধড়মড় করে উঠে গেলাম। সর্বনাশ আজতো আমি শেষ।কি বলব,মাইর তো সেদিন কমই খেলাম, আবার পারিশ্রমিক হিসেবে মোবাইলে ২০টাকা ঢুকিয়ে দিতে হয়েছে।তাও লাভ।মাইরের বদলে টাকা গেলো।
আমি প্রতিদিন মসজিদে নামায পড়তে যেতাম। যাতে হুজুর আমাকে ভালো মনে করেন।একদিন এশার সময় হুজুর আমাকে বলেন"রাকিব তুমিতো একাই ঘুমাও তাই না?"আমি বললাম" হ্যা"।"আমি তোমার সাথে ঘুমালে অসুবিধা হবে নাকি?"বললাম" এটাতো আমার সৌভাগ্য,আজ রাত থেকেই আসুন না"। তবুও একটি প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খেল।এতো সম্মানী ব্যাক্তি মসজিদে শোবার ঘর থাকতে আমার কাছে শুবেন কেন!? সাহস করে জিগ্যেস ও করলাম প্রশ্নটা।তবে এমন উওর ও আশা করিনি।উত্তর শুনে গা কাটা দিল।তিনি বললেন" মসজিদে আমার জ্বীন ছাএরা রাতে এসে জ্বালাতন করে, তারাও কিল ঘুসি বাদ রাখেনা।আবার একজন অন্যজনের বিরুদ্ধে নালিশ করে। আাবার বেত ও টেনে নিয়ে যায়।তাই অন্ধকারে কাউকে শাস্তিও দিতে পারি না। এজন্য মসজিদে থাকবো না"।যখন আমাদের বাসায় হুজুর এলো আমার ছোট ভাই তো আনন্দে আত্মহারা, হুজুরদের কাছে অনেক আদর পায় তো।হুজুর বলল "আমাকে পানি খাওয়াও"। আর ও তো কি করবে না কি করবে উওেজনায় পানি আনতে গিয়ে ভুলে নিজেই পানি খেয়ে আসলো।আর হুজুরের কাছে এলো খালি হাতে। হুজুর বলল "পানি কই"এবার আমি নিজে গেলাম ভিতরে গিয়ে ছোটটাকে ধমক দিয়ে বললাম "হুজুরকে পানি দাও নি কেন।"ও বলল "পানি ঢালতে ঢালতে ভুলে গেছি কেন ঢেলেছি,তাই নিজেই খেয়ে এসেছি।" আমি হাঁসবো না কাঁদবো বুঝতে না পেরে বললাম" বেশি লাফাসতো, তাই।"হুজুরকে এক গ্লাস পানি দিলাম।হুজুর আরেক গ্লাস চাইল দৌড়ে গিয়ে আরেক গ্লাস আনল শিশির। আবার আরেক গ্লাস চাইল, দিলাম, হুজুর আবার আরেক গ্লাস চাইল এরার পুরো জগ আনলাম। জগ শেষ।আমি ভাবলাম
হুজুরের জ্বীন খেয়েছে এত্ত পানি। হুজুর ছোটকে জিগ্যেস করল "তোমার নাম কি?" বলল "শিশির। " হুজুর বলল,"আগে ও পরে কিছু নেই?" ও বলল "না।" "তাহলে কেউ নাম জিগ্যেস করলে মোঃ শিশির। এবার বলো কি দিয়ে ভাত খেয়েছ?" শিশির বলল," মাছ দিয়ে।" হুজুর বলল, "কি মাছ? " শিশির বলে "মোঃ কাতলা মাছ"।হুজুরের শিক্ষা সার্থক।
আমি যখন প্রায় ঘুমিয়ে যাচ্ছি তখন বুঝতে পারি খাটটা মৃদূ কাঁপছে। কাঁপছে তো কাঁপছেই।যেন কেউ গর্জন করছে থেকে থেকে, আর খাটটাও কাঁপছে। আমি ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে গেলাম।কাঁপুনি থামছেনা দেখে হুজুরকে ডাকতে লাগলাম । জ্বীন এখানেও এল বুঝি এ ভয়ে মুখ দিয়ে কথা বেরুচ্ছেনা দেখে হুজুরকে খোঁচা দিলাম। হুজুর এবার জেগে ওঠে বালিশের তলা থেকে মোবাইল বের করে সালাম দিয়ে বলল "বউ আমি এখন ঘুমাচ্ছি তুমিও ঘুমাও সকালবেলা কথা বলব।" যে জন্য এতক্ষণ আমার পরানপাখি উড়ে যাচ্ছিল,সেজন্যই এবার আমার হাঁসিতে দম ফেটে যাচ্ছে।
পরদিন টিফিন টাইমে দোকানের সামনে দাড়িয়ে এ ব্যাপারটা স্কুলের বন্ধুদের বলেছিলাম, একজন পানি খাওয়ার ব্যাপারটার সাথে যোগ করল যে,"হুজুররা এমনিতেই বেশি খায়।" আমিও বললাম," হ্যা,হুজুরদের পেট দিঘীর মতো বিরাট"।মাথা ঘুরিয়েই দেখি ওই হুজুর আমার দিকে তাকিয়ে দাড়িয়ে আছে,যেন মনে মনে বলছে, "ওই বেটা,আমি তোর কি খেয়েছি?। ভাবলাম শালার হুজুরের সাথে জ্বীন হাজারটা আছে মনে হয়,নাহলে যেখানেই যাই।হুজুর কিভাবে আসে।
আরেকদিন বিকেলে ঘটল এরকমই আরেক ঘটনা,আমি মাঠ থেকে আমাদের ষাড়টা নিয়ে ফিরছি । হঠাৎ ষাড়টা লাফাতে লাফাতে দৌড় শুরু করল, দূরে দেখি ওই হুজুরই রাস্তায় দাড়িয়ে থেকে আমাকে ইশারায় বলছে, তুমি না দৌড়ে হাটতে থাকো, ফলে গরুটাও দৌড়াবেনা। কিন্তু হুজুরকে দেখে ষাড়টির দৌড় আরো বেড়ে গেল।এবার ঠেলা সামলায় কে। দৌড়ে গিয়ে হুজুরকে এমন জোরে গুতা দিলো,হুজুর প্রথমে গুতা খেয়ে উপরে উঠলো পরে গিয়ে পুকুরে।আমি ভাবলাম এই খাইছে,কাল আমি শেষ।হুজুরতো আমাকে মারবেনই তার সাথে সেদিনের স্কুলে ওঠা রাগটাও উশুল করবেন। আমার কি দোষ হুজুর তো আমি যেখানেই যাই,সেখানেই তাকে দেখি।ষাড়টি সম্ববত ব্যাপারটি বুঝতে পারছিল।তাই আমার পক্ষ থেকে সে ই দিল কঠিন ঝাড়া।
কঠিন ঝাড়া
মোঃ মেহেদী হাসান
আমাদের বাড়ীর সামনে মসজিদ। মসজিদের ইমাম মক্তব পড়াতেন। আমি ছিলাম সেখানকার ছাএ। হুজুর মাদ্রাসার শিক্ষক।অনেক বড় আলেম। রাতে মসজিদে থাকতেন।সকালবেলা ছাএদের মক্তবে
পড়াতেন। প্রতিদিন সকালে যখন সালাতুল ইসরাক পড়তেন ছেলেরা তখন এসে হুজুরের গায়ে কিল ঘুসি মারতো।হুজুর সালাতে এতোটাই মগ্ন থাকতো যে,নামাযের পর কে কে কিল মেরেছে তা মনে থাকতোনা। এজন্য ছাএরাও একে একে এসে মনের ঝাল মেটাতো । আমর এত সাহস নাই। হুজুর আবার পেটনোর সময় কাউকে মানতোনা।একদিন হুজুর নিজের ভাগনেকে এমন মাইর দিসে যে আমি তা কখনোই ভুলবোনা।পিটতে পিটতে হুজুরে টুপি কাত হয়ে গেল। কিছুক্ষন পর পড়েও গেল। আমি উঠিয়ে দিলাম।
এমন মাইরের কারনে সবাই তাকে জম হুজুর বলে ডাকতো।আবার ভালো ছাএদের ভালোবাসতেন আমি আবার বেশি ভালো ছাএ না হলেও যেদিন দেখতাম হুজুর পড়া ধরবেন সেদিন হুজুর কে তাল মেরে বেঁচে যেতাম বা পড়া পারার ভান করে হুজুরের সাহায্যার্থে অন্যপাশের ছোটদের পড়া ধরতাম।এতে হুজুর আমার উপর খুশি ছিলেন।
একদিন তো প্রায় ধরা খেয়েই যাচ্ছিলাম। আমার আগেরজনকে পড়া জিগ্যেস করতেই সেকি কান্না। হুজুর বলল,"তোর বাবার নামকি?" সে উওরে বলে"আমার মা জানে,আমি জানিনা যাই জিগ্যেস করে আসি?"হুজুর বলেন, "বাপের নামই জানস না, পড়া পারবি কি করে।নাকি পড়ার ভয়ে সব ভুলে গেলি। বস বেটা আমি আবার পড়া ধরতে আসবো"। এবারতো আমার পালা, ওর থেকে বাহিরে বের হওয়ার কথা মাথায় এল, পালাবার পথও পাচ্ছি না,এ হুজুর যে কিভাবে আরবি বানান পড়ায়,এত জগন্য বাক্য যে পড়তে গেলে এমনিতেই জিহ্বায় প্যাঁচ লেগে যায়।মুখস্ত করতে গেলে মস্তিষ্কের নিউরনও প্যাচিয়ে যাবে,যেমন:ডান চোখ যবরের উপর থাকিবে বাম চোখ যের এ থাকিবে এর পর কান, নাখ, হাত, মন সবই লাগাতে হয়,আমি পারি না তাই পালিয়ে বাঁচতে চাই,হুজুর এবার আমাকে ধরল,আজ আর বাঁচায় কে, এমন সময় কোন পূর্বাভাস ছাড়াই সশব্দে অজুটা পানচার হলো।হুজুর বলল,"ভাগ বেটা,অজু করে আয়"। আমি বাহিরে অনেক্ষন কাটিয়ে দিলাম যখন সময় প্রায় শেষ তখন ফিরে আসলাম।এখনতো পড়া ধরার সময় শেষ আমাকে আর পায় কে।শাহরুখ খানের সেই ডায়ালগ সত্যি হল।যখন কেউ কিছু করতে চায়,পুরো পৃথিবী তার সাহায্যে লেগে যায়।
কোনোদিন কোনোদিন পড়ায় না গেলে বাসা ফোন করে।একদিন আমি সকালে যাচ্ছিনা দেখে হুজুর ফোন করল,আম্মা অনেক ডাকল শুনতে না পেয়ে উঠলাম না,তাই আবার ফোন করায় আম্মা মোবাইল আমার কানে ধরে বলে কথা বল,আমি ঘুমাতে ঘুমাতে বললাম, "কে? "ও পাশ থেকে ভেসে এলো বিশাল এক জ্বালাময়ী ধমক।ধড়মড় করে উঠে গেলাম। সর্বনাশ আজতো আমি শেষ।কি বলব,মাইর তো সেদিন কমই খেলাম, আবার পারিশ্রমিক হিসেবে মোবাইলে ২০টাকা ঢুকিয়ে দিতে হয়েছে।তাও লাভ।মাইরের বদলে টাকা গেলো।
আমি প্রতিদিন মসজিদে নামায পড়তে যেতাম। যাতে হুজুর আমাকে ভালো মনে করেন।একদিন এশার সময় হুজুর আমাকে বলেন"রাকিব তুমিতো একাই ঘুমাও তাই না?"আমি বললাম" হ্যা"।"আমি তোমার সাথে ঘুমালে অসুবিধা হবে নাকি?"বললাম" এটাতো আমার সৌভাগ্য,আজ রাত থেকেই আসুন না"। তবুও একটি প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খেল।এতো সম্মানী ব্যাক্তি মসজিদে শোবার ঘর থাকতে আমার কাছে শুবেন কেন!? সাহস করে জিগ্যেস ও করলাম প্রশ্নটা।তবে এমন উওর ও আশা করিনি।উত্তর শুনে গা কাটা দিল।তিনি বললেন" মসজিদে আমার জ্বীন ছাএরা রাতে এসে জ্বালাতন করে, তারাও কিল ঘুসি বাদ রাখেনা।আবার একজন অন্যজনের বিরুদ্ধে নালিশ করে। আাবার বেত ও টেনে নিয়ে যায়।তাই অন্ধকারে কাউকে শাস্তিও দিতে পারি না। এজন্য মসজিদে থাকবো না"।যখন আমাদের বাসায় হুজুর এলো আমার ছোট ভাই তো আনন্দে আত্মহারা, হুজুরদের কাছে অনেক আদর পায় তো।হুজুর বলল "আমাকে পানি খাওয়াও"। আর ও তো কি করবে না কি করবে উওেজনায় পানি আনতে গিয়ে ভুলে নিজেই পানি খেয়ে আসলো।আর হুজুরের কাছে এলো খালি হাতে। হুজুর বলল "পানি কই"এবার আমি নিজে গেলাম ভিতরে গিয়ে ছোটটাকে ধমক দিয়ে বললাম "হুজুরকে পানি দাও নি কেন।"ও বলল "পানি ঢালতে ঢালতে ভুলে গেছি কেন ঢেলেছি,তাই নিজেই খেয়ে এসেছি।" আমি হাঁসবো না কাঁদবো বুঝতে না পেরে বললাম" বেশি লাফাসতো, তাই।"হুজুরকে এক গ্লাস পানি দিলাম।হুজুর আরেক গ্লাস চাইল দৌড়ে গিয়ে আরেক গ্লাস আনল শিশির। আবার আরেক গ্লাস চাইল, দিলাম, হুজুর আবার আরেক গ্লাস চাইল এরার পুরো জগ আনলাম। জগ শেষ।আমি ভাবলাম
হুজুরের জ্বীন খেয়েছে এত্ত পানি। হুজুর ছোটকে জিগ্যেস করল "তোমার নাম কি?" বলল "শিশির। " হুজুর বলল,"আগে ও পরে কিছু নেই?" ও বলল "না।" "তাহলে কেউ নাম জিগ্যেস করলে মোঃ শিশির। এবার বলো কি দিয়ে ভাত খেয়েছ?" শিশির বলল," মাছ দিয়ে।" হুজুর বলল, "কি মাছ? " শিশির বলে "মোঃ কাতলা মাছ"।হুজুরের শিক্ষা সার্থক।
আমি যখন প্রায় ঘুমিয়ে যাচ্ছি তখন বুঝতে পারি খাটটা মৃদূ কাঁপছে। কাঁপছে তো কাঁপছেই।যেন কেউ গর্জন করছে থেকে থেকে, আর খাটটাও কাঁপছে। আমি ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে গেলাম।কাঁপুনি থামছেনা দেখে হুজুরকে ডাকতে লাগলাম । জ্বীন এখানেও এল বুঝি এ ভয়ে মুখ দিয়ে কথা বেরুচ্ছেনা দেখে হুজুরকে খোঁচা দিলাম। হুজুর এবার জেগে ওঠে বালিশের তলা থেকে মোবাইল বের করে সালাম দিয়ে বলল "বউ আমি এখন ঘুমাচ্ছি তুমিও ঘুমাও সকালবেলা কথা বলব।" যে জন্য এতক্ষণ আমার পরানপাখি উড়ে যাচ্ছিল,সেজন্যই এবার আমার হাঁসিতে দম ফেটে যাচ্ছে।
পরদিন টিফিন টাইমে দোকানের সামনে দাড়িয়ে এ ব্যাপারটা স্কুলের বন্ধুদের বলেছিলাম, একজন পানি খাওয়ার ব্যাপারটার সাথে যোগ করল যে,"হুজুররা এমনিতেই বেশি খায়।" আমিও বললাম," হ্যা,হুজুরদের পেট দিঘীর মতো বিরাট"।মাথা ঘুরিয়েই দেখি ওই হুজুর আমার দিকে তাকিয়ে দাড়িয়ে আছে,যেন মনে মনে বলছে, "ওই বেটা,আমি তোর কি খেয়েছি?। ভাবলাম শালার হুজুরের সাথে জ্বীন হাজারটা আছে মনে হয়,নাহলে যেখানেই যাই।হুজুর কিভাবে আসে।
আরেকদিন বিকেলে ঘটল এরকমই আরেক ঘটনা,আমি মাঠ থেকে আমাদের ষাড়টা নিয়ে ফিরছি । হঠাৎ ষাড়টা লাফাতে লাফাতে দৌড় শুরু করল, দূরে দেখি ওই হুজুরই রাস্তায় দাড়িয়ে থেকে আমাকে ইশারায় বলছে, তুমি না দৌড়ে হাটতে থাকো, ফলে গরুটাও দৌড়াবেনা। কিন্তু হুজুরকে দেখে ষাড়টির দৌড় আরো বেড়ে গেল।এবার ঠেলা সামলায় কে। দৌড়ে গিয়ে হুজুরকে এমন জোরে গুতা দিলো,হুজুর প্রথমে গুতা খেয়ে উপরে উঠলো পরে গিয়ে পুকুরে।আমি ভাবলাম এই খাইছে,কাল আমি শেষ।হুজুরতো আমাকে মারবেনই তার সাথে সেদিনের স্কুলে ওঠা রাগটাও উশুল করবেন। আমার কি দোষ হুজুর তো আমি যেখানেই যাই,সেখানেই তাকে দেখি।ষাড়টি সম্ববত ব্যাপারটি বুঝতে পারছিল।তাই আমার পক্ষ থেকে সে ই দিল কঠিন ঝাড়া।
কোন মন্তব্য নেই